16th Oct 2021
572 বার পড়া হয়েছে
আন্তর্জাতিক বাজারে হালাল পণ্যের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভোক্তা পর্যায়ে সাধারণত পণ্য হালাল হারামের প্রশ্ন না উঠলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের মুসলিমরা হালাল হারাম বিষয়ে অনেক সচেতন। যে কোনো পণ্য কেনার আগে তা হালাল কিনা যাচাই করে নেন তারা। এ প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে হালাল সার্টিফিকেটের গুরুত্ব দিন দিন বেড়েছে। প্রায় প্রতিটি দেশেই একটি অথরিটি রয়েছে, যারা হালাল সার্টিফিকেট নিয়ে কাজ করেন। তাদের স্বীকৃতির ওপর নির্ভর করে বিশ্ববাজারে পণ্যটি হালাল অথবা হারাম হিসাবে বিবেচ্য হয়। এদিক থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে হালাল লোগো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ থেকে যে কটি কোম্পানি তাদের প্রস্তুতকৃত পণ্য বহির্বিশ্বে রপ্তানি করে থাকেন, তাদের অধিকাংশই পণ্যের গায়ে হালাল লোগো ব্যবহার করতে বাধ্য। ২০০৭ সাল থেকে যাচাই-বাছাই করে রপ্তানিকৃত পণ্যকে হালাল সার্টিফিকেট দিচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ড. আবু সালেহ পাটোয়ারী বলেন, এ সার্টিফিকেট গ্রহণ করে ১৪০টি কোম্পানি তাদের উৎপাদিত প্রায় ১ হাজার পণ্যের অনুক‚লে হালাল সনদ গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ৫০টি কোম্পানি প্রায় ৩৫০ পণ্য বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্যের বিপুল চাহিদা থাকায় আন্তর্জাতিক বাজার দখলে প্রসিদ্ধ কোম্পানিগুলো ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হালাল লোগো ব্যবহার করছে। এর ফলে দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠী পণ্যের গায়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হালাল লোগো দেখে নিশ্চিন্তে ক্রয় করতে পারছেন। পাশাপাশি বহির্বিশ্বে প্রস্তুতকৃত পণ্য রপ্তানিতে যে বাধা ছিল, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লোগো ব্যবহারের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সেই বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না রপ্তানিকারকদের। আমাদের লোগো বিশ্বজুড়ে গ্রহণযোগ্য। ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র বলছে, এ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর শত কোটি টাকার দেশি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। বিশেষত বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকায়ও রপ্তানি হচ্ছে। এর মাঝে যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর সাতটি দেশে স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ তাদের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হালাল লোগো ব্যবহার করে। প্রাণ, ইউনিভার্সাল ও বনফুল ইউরোপ আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্তত ৬টি দেশে তাদের পণ্য রপ্তানির সুযোগ পাচ্ছে হালাল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে। প্রসিদ্ধ ওষুধ কোম্পানি ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল তাদের উৎপাদিত ওষুধ রপ্তানি করছে থাইল্যান্ড, আমেরিকা, জর্জিয়া এবং ইউক্রেনে। অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য অনুসারে, সারা বিশ্বে প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের হালাল পণ্যের বাণিজ্য হয়। সুতরাং নিঃসন্দেহে বলা যায় হালাল পণ্যের বাজার অত্যন্ত প্রশস্ত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আরও বেশি গুরুত্ব আরোপ করলে শত কোটি টাকার বাণিজ্য সহস্র কোটিতে পৌঁছতে কালক্ষেপণ করবে না।
আপনার পঠিত আর্টিক্যাল সম্পর্কে মন্তব্য করুন